যশোরের ঝিকরগাছার একটি ক্লিনিক থেকে অন্তঃসত্ত্বার ভুয়া সার্টিফিকেট বের করে স্কুলছাত্রীর হবু স্বামীর মোবাইলে পাঠিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে পর্নোগ্রাফি আইনে সোমবার কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় মোট চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন- শহরতলীর ধোপাখোলা পশ্চিমপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে আলিফ (২১), আব্দুল হামিদের ছেলে পলাশ হোসেন (৩৪), মালঞ্চি এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে আল আমিন (১৯) এবং মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা মুড়াগাছা গ্রামের মঙ্গল দাসের ছেলে মিলন কুমার দাস (২৮)। পুলিশ এই মামলা তিনজনকে আটক করেছে।

ওই স্কুলছাত্রীর পিতা এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে (১৬) এবছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী। গত ৪ মে বিকালে তার বাড়িতে পাত্রপক্ষ আসে বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে। কিন্তু যেহেতু মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক তাই দুই বছর পর বিয়ে হবে বলে দুই পরিবারের মধ্যে কথা চূড়ান্ত হয়।

এই বিয়ের কথা জানতে পেরে আসামি আলিফ ষড়যন্ত্র করতে থাকে। সে প্রায় সময় তার মেয়েকে স্কুলে যাতায়াতের পথে উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দেয়। সে রাজি না হওয়ায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

বিয়েতেও রাজি না হওয়ায় তার ক্ষতির ষড়যন্ত্র করে। তার মেয়ের হবু স্বামীর মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করে তার কাছে গত ২ জুন ভুয়া মেডিকেল আল্ট্রাসনো ও মেডিকেল প্রেগনেন্সি রিপোর্ট পাঠায়। সেখানে বলা হয়েছে, তার মেয়ে ৭ সপ্তাহ তিন দিনের অন্তঃসত্ত্বা। এছাড়া মোবাইলের ম্যাসেঞ্জারে আজেবাজে ছবি পাঠায়। নানা কুপ্রস্তাব দেয়া হয় ম্যাজেঞ্জারে।

বিষয়টি ঘটকের মাধ্যমে জানতে পেরে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তাকে যশোরে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে আসামিদের কারসাজি বলে জানতে পারেন। থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে মাসেঞ্জারে লেখা আপত্তিকর কথার স্ক্রিনপ্রিন্ট এবং ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট সংযুক্ত করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি থানার এসআই জয়বালা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে মালঞ্চি এলাকা থেকে পলাশ, আল-আমিন ও মিলন কুমার দাসকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে মূল আসামি আলিফকে আটক করা যায়। তাকেও তাড়াতাড়ি আটক করা হবে বলে তিনি জানান।